মতাহের আলী ও আরকান আলী নামের দুই চাচাতো ভাইয়ের সন্ত্রাসী বাহিনীর ‘অত্যাচারে’ সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। মতাহের-আরকান বাহিনী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতার নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মতাহের আলী ও আরকান আলী তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। আর এই সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। এলাকার প্রভাবশালী ও সম্ভ্রান্তপরিবারকে ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা সহ জায়গা জমি। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে শুরু হয় ফিল্মি স্টাইলে সন্ত্রাসী হামলা, মামলা। বিভিন্ন ঘটনার জেরে তাদের বিরুদ্ধে থানা-পুলিশ সালিশ-বৈঠক হলেও এই অপরাধ জগত থেকে ফিরে আসেনি এই বাহিনী। মতাহের-আরকান বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা হলো- সুমন আলী, মিজান মিয়া, আব্দুর রহিম আবদিন, নাজিম উদ্দিন, রিয়াজ মিয়া, টিপু মিয়া, পাপলু মিয়া, আব্দুস ছত্তার, লিপু মিয়া, কুটিনা বেগম, তামান্না আক্তার সহ ১০/১৫ জনের একটি দল।
জানা যায়, সম্প্রীত সময়ে ফুলবাড়ী উত্তরপাড়ার একটি আদর্শবান পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মতাহের-আরকান বাহিনীর অন্যতম সদস্য টিপু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। অনুসন্ধানে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে বেআইনি জনতায় দলবন্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র ধারালো দা, চাকু, কাঠের রুইল, লাঠিসোটা ইত্যাদি সহকারে ফুলবাড়ী উত্তরপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আবুল হাসানের বসতঘরে অনধিকার প্রবেশ করে আবুল হাসান ও তার পরিবারের উপর অতর্কিতভাবে আক্রমন করে। এই সন্ত্রাসী হামলায় আবুল হাসান, তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম সহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা বসতঘরের আলমারী ভেঙ্গে ড্রয়ারে থাকা নগদ এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং বসত ঘরের দরজা, জানালা ভাংচুর সহ বসতঘর ভাংচুর করে অনুমান তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এক পর্যায়ে আশ-পাশের লোকজন আসতে থাকলে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়া সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এদিকে আবুল হাসানের অবস্থা মারাত্মক হওয়ায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কত্যর্বরত ডাক্তার অবস্থা গুরুতর দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন এবং তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম সহ অন্যান্য আহতরা গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মতাহের-আরকান বাহিনী কর্তৃক এরকম শত শত ঘটনার সাক্ষী ফুলবাড়ীবাসী।
ফুলবাড়ী উত্তরপাড়া এলাকার অধিকাংশ লোক অভিযোগ করে বলেন, মতাহের আলী ও আরকান আলী সহ তাদের পরিবারের লোকজন খুবই খারাপ, দাঙ্গাবাজ, লাঠিয়াল ও জুলুমবাজ প্রকৃতির লোক। প্রায় সময় তারা বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়া অহেতুক ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থাকে। তারা আইন কানুনের ধার ধারেনা, সমাজের বিচার আচার মানেনা। মতাহের-আরকান বাহিনীর ‘অত্যাচারে’ অতিষ্ঠ ফুলবাড়ীবাসী।


