ঢাকার প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তান এখন মাদকের অভয়ারণ্য! মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবার প্রকাশ্য বেচাকেনা এখন নিয়মিত চিত্র। এই এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবাধ মাদক ব্যবসা, যা রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা ও নৈতিকতার জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্টেডিয়াম সংলগ্ন দৈনিক বাংলার মোড় থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত এবং শহীদ মতিউর রহমান পার্ক (নাট্যমঞ্চ) এলাকায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাঁজা-ইয়াবা বিক্রি হয় প্রকাশ্যে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নিয়মিত মাসোহারার বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করছে তাদের মাদক কারবার।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এই ব্যবসার পেছনে রয়েছে সুসংগঠিত সিন্ডিকেট, যাদের নেতৃত্বে রয়েছে ‘আলী’ ও ‘লালন’ নামে চিহ্নিত কয়েকজন। তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় মাদক বাণিজ্য করে আসছে এবং প্রশাসনের কোনো বাধা ছাড়াই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, কৌশলে কিছু নারীকে ব্যবহার করে এই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে, যা এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হয়ে পড়ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, এমনকি ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকাপয়সা না পেলে, রাস্তায় চলা নারীদের কানের দুল, গলার চেইন, মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে তারা।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই ভয়াবহ অপরাধচক্রটি গড়ে উঠেছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, সচিবালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম, আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ও ঢাকার বৃহত্তম বিপণিবিতানগুলোর নিকটবর্তী এলাকায়—যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত।
সচেতন মহল বলছেন, “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পুরো জাতিকে চরম মূল্য দিতে হবে।” তারা দ্রুত এই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানোর এবং সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।


